টঙ্গীতে আগুন: বাবা হলেন নিহত ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা, দেখতে পেলেন না ছেলের মুখ

- আপডেট: ০৬:১৭:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ৬ অক্টোবর ২০২৫
- / ১৮০১৭
নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
গাজীপুরের টঙ্গীতে রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ উৎসর্গ করা ফায়ার সার্ভিস কর্মী নুরুল হুদার ঘরে এসেছে নতুন সদস্য। মৃত্যুর মাত্র ১২ দিন পর পুত্রসন্তানের বাবা হলেন নুরুল হুদা।
তবে এ আনন্দের মাঝেই আছে অশেষ বেদনা,নবজাতক সন্তান কখনই দেখতে পাবে না তার বীর পিতাকে, যিনি দেশের মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন।
সোমবার (৬ অক্টোবর) সকালে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পুত্রসন্তানের জন্ম দেন নুরুল হুদার স্ত্রী।
ফায়ার সার্ভিস অ্যান্ড সিভিল ডিফেন্সের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এসব তথ্য জানান।
তিনি জানান, গত ২২ সেপ্টেম্বর বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে গাজীপুরের টঙ্গী সাহারা মার্কেট এলাকায় একটি রাসায়নিক গুদামে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটে। আগুন নিয়ন্ত্রণে অংশ নিতে গিয়ে গুরুতর দগ্ধ হন ফায়ার ফাইটার মো. নুরুল হুদা।
পরে তাকে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়। টানা দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২৪ সেপ্টেম্বর বিকেল ২টা ৪০ মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
একই ঘটনায় ফায়ার ফাইটার শামীম আহমেদ ও ওয়্যারহাউজ ইন্সপেক্টর খন্দকার জান্নাতুল নাঈমও প্রাণ হারান।
১৯৮৭ সালের ২১ জুলাই ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার ধামাইল গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নুরুল হুদা। ২০০৭ সালের ২৯ মার্চ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে ফায়ার ফাইটার হিসেবে যোগ দেন তিনি। পেশাগত জীবনে তিনি ছিলেন দায়িত্বশীল, সাহসী ও কর্তব্যনিষ্ঠ।
নতুন জন্ম নেওয়া সন্তান ছাড়াও শহীদ ফায়ার ফাইটার নুরুল হুদা রেখে গেছেন ১০ বছরের এক কন্যা ও তিন বছরের আরও এক পুত্র সন্তান।
পরিবারের সদস্যরা জানান, তিনি ছিলেন সবার প্রিয়, নির্ভীক একজন মানুষ। দেশের মানুষের জীবন বাঁচাতে গিয়ে নিজের জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন—এটাই তার সবচেয়ে বড় গর্ব।
চিরনিদ্রায় শায়িত এই বীর অগ্নিনির্বাপককে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছে পুরো জাতি।